লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে বিজয়ের রঙিন উৎসব দেখেছেন মাঠে। অশ্রুভেজা আনন্দ কি দেখেছেন?
ড্রেসিংরুমে ঢুকে সাকিব আল হাসান আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না। ঘামে ভেজা গালে বাড়তি ঔজ্জ্বল্য ঝিলিক দিয়ে উঠল। ছলছল চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ল আনন্দাশ্রু। অধিনায়ককে দেখে অন্যরাও আবেগে থরথর। কান্না...আনন্দের কান্না। সাফল্যের কান্না। নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার কান্না। এ কান্না অনাস্বাদিত এক জয়কে আপন করে পাওয়ার কান্নাও।
হঠাৎ হঠাৎ জয়ের আনন্দে বাংলাদেশ এত দিন কেবল হেসেছেই। কিন্তু কান্না তো তখনই আসে, আনন্দটা যখন হয় বাঁধনহারা। এত উদ্যাপনেও থেকে যায় কিছু অতৃপ্তি, মনে হয় আরও কিছু করা দরকার...কান্না তখনই আসে। তৃপ্তির সীমা ছাড়িয়ে সেই অতৃপ্তির চৌকাঠে পা রাখা বাংলাদেশ তো কাল কাঁদবেই!
স্টেডিয়াম ছেড়ে যাওয়ার সময় অবশ্য সাঁঝের আঁধার ছিন্ন করা হাসিতেই উজ্জ্বল ছিল সাকিবের মুখ। ড্রেসিংরুমে কেঁদেছিলেন কেন—প্রশ্নে একটু থমকান। তারপর আবারও হাসি, ‘...জানি না কেন কেঁদেছি...সবাই-ই তো কেঁদেছে। এত বড় অর্জন, কাঁদব না?’ মাহমুদউল্লাহর কাছেও এই কান্নার অনুবাদ একই রকম, ‘আসলে নিজেকে ধরে রাখতে পারেনি কেউ। ড্রেসিংরুমে ঢুকে হালকা সেলিব্রেট করার পর দেখলাম সাকিবের চোখে পানি। তারপর আমরাও কেঁদেছি। আনন্দে কেঁদেছি।’
এটা এমন এক আনন্দ, যাকে ধরাছোঁয়া যায় না, অনুভব করা যায় কেবল। তবে ম্যাচের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে আক্ষরিক অর্থেই আনন্দটা ‘ধরতে’ পারলেন রকিবুল হাসান। শফিউলের বলে কেন উইলিয়ামসনের পুল, ডিপমিড উইকেটে ক্যাচটা লুফে নিলেন রকিবুল। যে ক্যাচের আরেকটা অর্থ বাংলাদেশের জয়, সিরিজ জয়ের আনন্দও। রকিবুল ম্যাচ শেষে দারুণ খুশি, ‘ও শটটা খেলার পরই বুঝতে পারছিলাম বলটা হাতে আসছে। ধরতে না পারার তো কোনো কারণ নেই...।’ যাঁর বলে উইলিয়ামসন ওভাবে উড়ে গেলেন রকিবুলের হাতে, সেই শফিউলও নাকি শেষ ওভারে ছিলেন দারুণ আত্মবিশ্বাসী, ‘শেষ ওভারে ১৬ রান দরকার ছিল ওদের। জানতাম বাউন্ডারি মারতে না পারলে ওরা রানটা করতে পারবে না। ভালো জায়গায় বল ফেলাটাই তাই টার্গেট ছিল। এক এক করে নিলেও তো আর ১৬ হবে না...।’
মাত্রই ১৮তম ওয়ানডে খেলা শফিউল শেষ ওভারে ১৬ রান না দেওয়ার চ্যালেঞ্জ জিতেছেন। আর শাহরিয়ার নাফীস জিতেছেন ক্যারিয়ারেরই অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আগের ম্যাচেই ৭৩ বলে ৭৩ রান করা বাঁহাতি এই ওপেনার কাল তো পেলেন ‘গোল্ডেন ডাক’, তাঁর আবার চ্যালেঞ্জ জেতা কী? ড্রেসিংরুমের করিডরে শাহরিয়ারও হাসলেন প্রশ্নটা শুনে, ‘আমি যে প্রথম বলেই আউট হয়ে গেছি, আউট হওয়ার পর ওটা আর মনেই ছিল না। প্রতিটি মুহূর্তে মনে হয়েছে, আমরা জিততে যাচ্ছি। আমাদের জিততে হবে। দল জিতেছে, সিরিজ জয় এসেছে, এটাই সবচেয়ে বড় কথা। দল থেকে ছিটকে পড়ার পর সব সময় কল্পনা করেছি, যেদিন ফিরব সেদিন যেন অনেক বড় উৎসব করতে পারি আমরা। আজ (গতকাল) সেই উৎসবটা তো হলো।’ শাবাশ শাহরিয়ার! দলীয় সাফল্যের আনন্দস্রোতে যদি ব্যক্তিগত দুঃখ-কষ্ট বালুকণার মতো ভেসেই না যায়, সেটা আবার কিসের সাফল্য?
কালকের ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ না নাঈম খেলবেন, তা নিয়ে আগের দিন সামান্য দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। উইনিং কম্বিনেশন ধরে রাখার স্বার্থে শেষ পর্যন্ত দলের বাইরে ছিলেন নাঈমই। কিন্তু ভাগ্যে থাকলে ঠেকায় কে? জুনায়েদ সিদ্দিকের জায়গায় খুব অল্প সময়ের জন্য ফিল্ডিং করতে নেমেই ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন নাঈমও! সাকিবের করা ৪৯তম ওভারে ডিপমিড উইকেট থেকে তাঁর সরাসরি থ্রোতে নাথান ম্যাককালাম রানআউট হয়ে না গেলে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কাল বিজয়ের কাব্য নাও লেখা হতে পারত। দলের জয়ে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখতে পারায় সৃষ্টিকর্তাকেই ধন্যবাদ দিচ্ছেন নাঈম, ‘সৃষ্টিকর্তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ যে উনি আমাকে দিয়ে ওই সময়ে এই রানআউটটা করালেন। তাতে আমিও দলের সাফল্যে কিছুটা অবদান রাখতে পারলাম। আমার টার্গেটই ছিল সরাসরি বেল ফেলব, অন্ততপক্ষে মুশফিকুরের ধারেকাছে যেন ফেলতে পারি থ্রোটা। সেটা হওয়ায় সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ।’
সন্ধ্যায় বাংলাদেশ দল যখন স্টেডিয়াম ছাড়ছে, আকাশের চোখেও জল। টিপটিপ বৃষ্টি একটু পরই নামল জোরে। বিজয়ের কান্না কি তবে আকাশও কাঁদল?
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সিরিজ জয়
মৌসুম প্রতিপক্ষ ম্যাচ জয় হার
২০০৪-০৫ জিম্বাবুয়ে ৫ ৩ ২
২০০৫-০৬ কেনিয়া ৪ ৪ ০
২০০৬ কেনিয়া ৩ ৩ ০
২০০৬-০৭ জিম্বাবুয়ে ৫ ৫ ০
২০০৬-০৭ স্কটল্যান্ড ২ ২ ০
২০০৬-০৭ জিম্বাবুয়ে ৪ ৩ ১
২০০৭-০৮ আয়ারল্যান্ড ৩ ৩ ০
২০০৮-০৯ জিম্বাবুয়ে ৩ ২ ১
২০০৯ ও. ইন্ডিজ ৩ ৩ ০
২০০৯ জিম্বাবুয়ে ৫ ৪ ১
২০০৯-১০ জিম্বাবুয়ে ৫ ৪ ১
*২০১০ নিউজিল্যান্ড ৫ ৩ ০
* সিরিজ অসমাপ্ত
ড্রেসিংরুমে ঢুকে সাকিব আল হাসান আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না। ঘামে ভেজা গালে বাড়তি ঔজ্জ্বল্য ঝিলিক দিয়ে উঠল। ছলছল চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ল আনন্দাশ্রু। অধিনায়ককে দেখে অন্যরাও আবেগে থরথর। কান্না...আনন্দের কান্না। সাফল্যের কান্না। নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার কান্না। এ কান্না অনাস্বাদিত এক জয়কে আপন করে পাওয়ার কান্নাও।
হঠাৎ হঠাৎ জয়ের আনন্দে বাংলাদেশ এত দিন কেবল হেসেছেই। কিন্তু কান্না তো তখনই আসে, আনন্দটা যখন হয় বাঁধনহারা। এত উদ্যাপনেও থেকে যায় কিছু অতৃপ্তি, মনে হয় আরও কিছু করা দরকার...কান্না তখনই আসে। তৃপ্তির সীমা ছাড়িয়ে সেই অতৃপ্তির চৌকাঠে পা রাখা বাংলাদেশ তো কাল কাঁদবেই!
স্টেডিয়াম ছেড়ে যাওয়ার সময় অবশ্য সাঁঝের আঁধার ছিন্ন করা হাসিতেই উজ্জ্বল ছিল সাকিবের মুখ। ড্রেসিংরুমে কেঁদেছিলেন কেন—প্রশ্নে একটু থমকান। তারপর আবারও হাসি, ‘...জানি না কেন কেঁদেছি...সবাই-ই তো কেঁদেছে। এত বড় অর্জন, কাঁদব না?’ মাহমুদউল্লাহর কাছেও এই কান্নার অনুবাদ একই রকম, ‘আসলে নিজেকে ধরে রাখতে পারেনি কেউ। ড্রেসিংরুমে ঢুকে হালকা সেলিব্রেট করার পর দেখলাম সাকিবের চোখে পানি। তারপর আমরাও কেঁদেছি। আনন্দে কেঁদেছি।’
এটা এমন এক আনন্দ, যাকে ধরাছোঁয়া যায় না, অনুভব করা যায় কেবল। তবে ম্যাচের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে আক্ষরিক অর্থেই আনন্দটা ‘ধরতে’ পারলেন রকিবুল হাসান। শফিউলের বলে কেন উইলিয়ামসনের পুল, ডিপমিড উইকেটে ক্যাচটা লুফে নিলেন রকিবুল। যে ক্যাচের আরেকটা অর্থ বাংলাদেশের জয়, সিরিজ জয়ের আনন্দও। রকিবুল ম্যাচ শেষে দারুণ খুশি, ‘ও শটটা খেলার পরই বুঝতে পারছিলাম বলটা হাতে আসছে। ধরতে না পারার তো কোনো কারণ নেই...।’ যাঁর বলে উইলিয়ামসন ওভাবে উড়ে গেলেন রকিবুলের হাতে, সেই শফিউলও নাকি শেষ ওভারে ছিলেন দারুণ আত্মবিশ্বাসী, ‘শেষ ওভারে ১৬ রান দরকার ছিল ওদের। জানতাম বাউন্ডারি মারতে না পারলে ওরা রানটা করতে পারবে না। ভালো জায়গায় বল ফেলাটাই তাই টার্গেট ছিল। এক এক করে নিলেও তো আর ১৬ হবে না...।’
মাত্রই ১৮তম ওয়ানডে খেলা শফিউল শেষ ওভারে ১৬ রান না দেওয়ার চ্যালেঞ্জ জিতেছেন। আর শাহরিয়ার নাফীস জিতেছেন ক্যারিয়ারেরই অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আগের ম্যাচেই ৭৩ বলে ৭৩ রান করা বাঁহাতি এই ওপেনার কাল তো পেলেন ‘গোল্ডেন ডাক’, তাঁর আবার চ্যালেঞ্জ জেতা কী? ড্রেসিংরুমের করিডরে শাহরিয়ারও হাসলেন প্রশ্নটা শুনে, ‘আমি যে প্রথম বলেই আউট হয়ে গেছি, আউট হওয়ার পর ওটা আর মনেই ছিল না। প্রতিটি মুহূর্তে মনে হয়েছে, আমরা জিততে যাচ্ছি। আমাদের জিততে হবে। দল জিতেছে, সিরিজ জয় এসেছে, এটাই সবচেয়ে বড় কথা। দল থেকে ছিটকে পড়ার পর সব সময় কল্পনা করেছি, যেদিন ফিরব সেদিন যেন অনেক বড় উৎসব করতে পারি আমরা। আজ (গতকাল) সেই উৎসবটা তো হলো।’ শাবাশ শাহরিয়ার! দলীয় সাফল্যের আনন্দস্রোতে যদি ব্যক্তিগত দুঃখ-কষ্ট বালুকণার মতো ভেসেই না যায়, সেটা আবার কিসের সাফল্য?
কালকের ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ না নাঈম খেলবেন, তা নিয়ে আগের দিন সামান্য দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। উইনিং কম্বিনেশন ধরে রাখার স্বার্থে শেষ পর্যন্ত দলের বাইরে ছিলেন নাঈমই। কিন্তু ভাগ্যে থাকলে ঠেকায় কে? জুনায়েদ সিদ্দিকের জায়গায় খুব অল্প সময়ের জন্য ফিল্ডিং করতে নেমেই ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেন নাঈমও! সাকিবের করা ৪৯তম ওভারে ডিপমিড উইকেট থেকে তাঁর সরাসরি থ্রোতে নাথান ম্যাককালাম রানআউট হয়ে না গেলে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কাল বিজয়ের কাব্য নাও লেখা হতে পারত। দলের জয়ে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখতে পারায় সৃষ্টিকর্তাকেই ধন্যবাদ দিচ্ছেন নাঈম, ‘সৃষ্টিকর্তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ যে উনি আমাকে দিয়ে ওই সময়ে এই রানআউটটা করালেন। তাতে আমিও দলের সাফল্যে কিছুটা অবদান রাখতে পারলাম। আমার টার্গেটই ছিল সরাসরি বেল ফেলব, অন্ততপক্ষে মুশফিকুরের ধারেকাছে যেন ফেলতে পারি থ্রোটা। সেটা হওয়ায় সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ।’
সন্ধ্যায় বাংলাদেশ দল যখন স্টেডিয়াম ছাড়ছে, আকাশের চোখেও জল। টিপটিপ বৃষ্টি একটু পরই নামল জোরে। বিজয়ের কান্না কি তবে আকাশও কাঁদল?
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সিরিজ জয়
মৌসুম প্রতিপক্ষ ম্যাচ জয় হার
২০০৪-০৫ জিম্বাবুয়ে ৫ ৩ ২
২০০৫-০৬ কেনিয়া ৪ ৪ ০
২০০৬ কেনিয়া ৩ ৩ ০
২০০৬-০৭ জিম্বাবুয়ে ৫ ৫ ০
২০০৬-০৭ স্কটল্যান্ড ২ ২ ০
২০০৬-০৭ জিম্বাবুয়ে ৪ ৩ ১
২০০৭-০৮ আয়ারল্যান্ড ৩ ৩ ০
২০০৮-০৯ জিম্বাবুয়ে ৩ ২ ১
২০০৯ ও. ইন্ডিজ ৩ ৩ ০
২০০৯ জিম্বাবুয়ে ৫ ৪ ১
২০০৯-১০ জিম্বাবুয়ে ৫ ৪ ১
*২০১০ নিউজিল্যান্ড ৫ ৩ ০
* সিরিজ অসমাপ্ত
v e r s i t a y d d m i s s i o n . b l o g s p o t . c o m
ReplyDelete